আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষা-২০২৫-এর ব্যাচ-১-এর আবেদন ফি ৪০২০/= টাকা থেকে কমিয়ে সর্বোচ্চ ৩০০/= (তিনশত) টাকা নির্ধারদের ব্যাপারে বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত আশ্বাসের প্রেক্ষিতে হ্রাসকৃত জিতে ফরমফিলাপ করার আশায় অপেক্ষমান প্রায় ৩৫/৪০ হাজার শিক্ষানবীশ আইনজীদের ফরম ফিলাপ করার ও প্রস্তুতি নেয়ার জন্য কমপক্ষে ৬০ (বাট) কার্যদিবস ফরম ফিলাপের যেয়ান বৃদ্ধি করা সহ বার কাউন্সিলের যৌক্তিক সংস্কারের দাবীতে শিক্ষানবীশ আইনজীবী ও আইন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি।
আমরা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে নিবন্ধিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থীবৃন্দ। দেশের আইনাদনের ভবিষ্যত কর্ণধার আমরা। আমরা বর্তমানে শিক্ষানবীশকাশেও দেশের আইনী সেবাকে সমোন্নতে রেখে দেশের পাকি শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে বিনা পারিশ্রমিকের প্রমিকও বটে। আমরা আইনের বাহক ও দেবক। আইন ও আইনের বাহকগণ বালাদেশের দুটি চোখ। এই চোখ দুটি মানুষের মত ৩৬০ (একশত আশি ডিগ্রি) ঘূর্ণমান শক্তিতে বাংলাদেশের সকল কিছু সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষনে তাবে। আমরা শিক্ষানবীশ আইনজীবীয় সেই পর্যবেক্ষণ দৃষ্টিশক্তির প্রাথমিক ল্যাগ।
আইনজীবী একটি স্বাধীন পেশা। দেশ-বিদেশে আইনগত কর্তৃত্বাধীনে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আইনী ডিগ্রীর সনদধারী আমরা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ-এর সংবিধানের ৪০নং অনুচ্ছেদে “পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা” শিরোনামে মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত বিধান বিস্তৃত হয়েছে। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “আইনের দ্বারা আরোপিত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে কোন পেশা বা বৃত্তি-এষণের কিংবা কারবার বা ব্যবসায়-পরিচালনার জন্য আইনের যারা কোন যোগ্যতা নির্ধারিত বইয়া থাকিলে অনুরূপ যোগ্যতা সম্পন্ন প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন আইনসঙ্গত পেশা বা ধুতি-গ্রহণের এবং যে কোন আইনসঙ্গত কারবার বা ব্যবসায়-পরিচালনার অধিকার থাকিবে। তাহলে আমরা আইনগতভাবে আইনী পেশায় প্রবেশের জন্য আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আইনের ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রী অর্থনি করা সত্বেও বার কাউন্সিল মূলতঃ সংবিধানের এই বিধান লংঘন করে আইনজীবী তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করে সেসকল বিভিন্ন বিশ্বাবিদ্যালয়ের পৃষ্টীত পরীক্ষা পদ্ধতি বৈধতার চ্যালেঞ্জ করে তাদের পরীক্ষিত ফলাফলকে বৃদ্ধাখুলি দেখিয়ে বার কাউন্সিল শিক্ষানবিশদের আইন পেশায় প্রবেশের
এই সংবিধান লঙ্ঘনকারী ও বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইন অনুষদের পরীক্ষা পদ্ধতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনকারী বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার ফি নির্ধানের ক্ষেত্রে আবার অমান্য করা হয়েছে সরকারের আরেক নীতিমাল্য নির্ধারনীর প্রজ্ঞাপনকে। ৩০/১২/২০১৪ইং তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের স্মারক নং ০৭,০০,০০০০.১৭২৩০৭,০০৩১৫.৩৬২ মূলে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বিসিএস ব্যাতীত নন ক্যাডার পদ এবং সরকারী/আধা-সরকারী/স্বায়ত্ব শাসিত, আধা স্বায়ত্ব শাসিত/খ-পালিত সংবিধিবদ্ধ বিভিন্ন কর্পোরেশনের বিভিন্ন গ্রেডযুক্ত পদের পরীক্ষার ফি ৫০/= টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০০/= (দুইশত) টাকা নির্ধারনের বিধান করা হয়েছে।
আইনজীবীদের বিনা বেতনের স্বাধীন কর্মের পেশায় পরীক্ষা নেয়াই অবৈধ হওয়া স্বত্ত্বেও সেখানে তিন স্তরের পরীক্ষা নিচ্ছে এবং ফি নেয়া হলে ৪,০২০/= (চার হাজার বিশ) টাকা। যা অযৌক্তিক এবং সরকারের আরেক প্রজ্ঞাপনকে অমান্য করতো বটেই। আইনজীবী একমাত্র পেশা যে পেশাজীবীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের এক পয়সাও খরচ নাই। আইনজীবীদের সন্তানরা পোষ্য কোটায় আইনজীবী হওয়ারও কোন সম্ভাবনা নাই। বেতন নাই, ভাতা নাই, নাই কোন ভবিষ্যত নিশ্চয়তা। তাহলে এখানে এই স্বাধীন পেশায় প্রবেশের সংবিধান লজ্জনকারী পরীক্ষা পদ্ধতির পরীক্ষার ফি কেনো ৪,০২০/= টাকা হবেঃ এটা সর্বোচ্চ ৩০০/= টাক্য করা হোক।
২৫/০২/২০২৫ তারিখে আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষা ২০২৫-এর ফরম ফিলাপের নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশে ফরম ফিলাপের মেয়াদ ০১/০৩/২০২৫ থেকে ৩১/৩/২০২৫ তারিখ পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে এবং ১০/৩/২০২৫ তারিখে উক্ত তারিখ কোনক্রমে পরিবর্তন হবেনা বা মেয়াদ বৃদ্ধি হবে না বলে রিমাইন্ডার দিয়েছে বার কাউন্সিল এবং ১৮/৩/২০২৫ তারিখ থেকে রেজিস্ট্রেশন নবায়নের সার্ভার বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। যেখানে রেজিস্ট্রেশন একটি চলমান প্রক্রিয়া, সেটি বন্ধ কারার কোন আইনগত ভিত্তি নাই। রেজিস্ট্রেশন নবায় না করলে বার কাউন্সিলের দুর্নীতির কালো খাবায় আটকে পড়া অসংখ্য শিক্ষানবীশ কিভাবে তালিকাভুক্তি পরীক্ষা ২০২৫-এ অংশগ্রহণ করবে? রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া বন্ধ করে বর্তমান নবগঠিত বার কাউন্সিল স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণ রেখেছে-যা বে-আইনী ও অনৈতিকও বটে। তাছাড়া তারও আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন নবায়ন প্রত্যাশী আবেদনকারীদেরও দীর্ঘ মাসের পর মাস অতিক্রম হয়ে যাওয়ার পরেও তাদের কাছে কোন ম্যাসেজ না যাওয়ায় তারাও রেজিস্ট্রেশন নবায়নের ক্ষেত্রে বার কাউন্সিলের স্বেচ্ছাচারিতা ও বিরম্বনার শিকার হয়েছে। তারা অনেকেই এ কারণে ফরম ফিলাপ করতে পারেন নি। তাছাড়াও ফরম ফিলাপ অর্থাৎ আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার ফি ৪,০২০/= টাকা থেকে কমিয়ে সর্বোচ্চ ৩০০/= (তিনশত) টাকা নির্ধারণের দাবীতে আইন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষানবীশ আইনজীবীরে ০৯/০৩/২০২৫ তারিখে ঘোষিত ১৬/৩/২০২৫ তারিখের বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রচারণা দৃষ্টিগোচর হয়ে বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির মাননীয় চেয়ারম্যান জনাব রুহুল কুদ্দুস কাজল স্যার বলেছেন শিক্ষানবীশ আইনজীবী ও আইন শিক্ষার্থীদের ঘোষিত কর্মসূচি ঘোষণারও আরো ১০দিন আগে থেকেই অর্থ ২৭/০২/২০২৫তারিখেই বার কাউন্সিল আমাদের পরীক্ষার ফি কমানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করেছে। এ বিষয়ে ১৯/০৩/২০২৫ তারিখের (বুধবার) অনুষ্ঠিতব্য মিটিং-এ এজেন্ডা রাখা হয়েছে। বার কাউন্সিলের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান এবং আমাদের দাবির বিষয়ে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশ্বাস দেন।
১৯/৩/২০২৫ তারিখের অপেক্ষায় কেউ ফরম ফিলাপ করেনি। উক্ত ১৯/০৩/২০২৫ তারিখে বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির মনোনীত মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয় জনাব রুহুল কুদ্দুস কাজল স্যারেরই ফেসবুক বর্তায় জানো হয় মিটিংটি পরের দিন অর্থাৎ ২০/০৩/২০২৫ তারিখ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। আবারও আস্থা রাখার আহবান জানান। আমরা আমাদের কর্তৃপক্ষের প্রতি আস্থা রাখলাম। ২০/০৩/২০১৫ তারিখ সভা শেষে জানানো হয়, সভা পরীক্ষার ফি ৩০০/= টাকা নির্ধারনের দাবীর বিষয়ে বিস্ফারিত আলোচনা হয়েছে। আলোচনা শেষে যেহেতু ইতিমধ্যে ৮০% পরীক্ষার্থী ফরম ফিলাপ করেছে সেহেতু এখন টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে তাদের সাথে বৈষম্য করা হবে। তাই এ বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। বার কাউগি পরবর্তী কোন সভায় এই পরীক্ষার ফি কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এখানে আবারও তাদের প্রত আস্থা রাখার আহ্বান জানান তিনি। আমরা আবারও নির্বাহী কমিটির মাধ্যমে বার কাউন্সিলের পরবর্তী সভা পর্যন্ত অপেক্ষ করার আশ্বাস পেলাম। আমরা অপেক্ষমান পরবর্তী সভার সিদ্ধান্তের জন্য। যেখানে ১৬/৩/২০২৫ তারিখে বলেছেন আমাদের কর্মচসূচি ঘোষণারও ১০ দিন আগে থেকে ফি কমানোর চিন্ত করেছেন সেখানে ১৬/৩/২০২৫ তারিখের পর এই ৪/৫ দিনে ৮০% শিক্ষার্থী আপনার ফি কমানোর আশ্বাস পাওয়ার পরও অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করে ফরমফিলাপ করেছে-এই কথাটাকি স্ব-বিরোধী বক্তব্য নয়। তাছাড়া ৪,১২০/= টাকা অযৌক্তি মনে করে ফি কমানোর চিন্ত করেও কেনো না কমিয়ে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অযৌক্তি টাকা নো হয়েছে- এটাকি বে-আইনি নয়? আর টাকা অতিরিক্ত নিয়েছেনতো কি হয়েছে আপনার শিক্ষার্থীদের মোবাইল নম্বরে বিকাশ, রকেট, নগদ, ইত্যাদি প্রক্রিয়া টাকা ফেরৎ দিলে অথবা তা সম্ভব না হলে শিক্ষানবিশরা যে যেই মোবাইল অপারেটর দিয়ে আবেদন
করেছে সেই নম্বরে ফ্লেক্সিলোড করে টাকা ফেরত দিলেই বৈষম্য থাকে না এবং নতুন নির্ধারিত ফিতে অবশিষ্ট্য শিক্ষানবিশরা ফরম ফিলাম করতে পারে। বার বার ফি কমানোর আশ্বাস দিয়ে শিক্ষানবীশদেরকে ফরম ফিলাপ থেকে বিরত রেখে সিদ্ধান্তহীন ভাবেই পবিত্র ঈদুল ফিতর-২০২৫ এর দিন ৩১/৩/২০২৫ তারিখে রাত ১১:৫৯ মিনিটে ফরম ফিলাপ বন্ধ করে দেয়া কি বার কাউন্সিলের স্বৈরাচারিতা নয়া
আমরা এই জাতির কাছে প্রশ্ন রাখলাম। ফরম ফিলাপ করা-না-করার বিষয়ে শিক্ষানবীশদের কোন দায় এখনে নাই। বার কাউন্সিল রেজিস্ট্রেশন নবায়ন প্রক্রিয়া বিঘ্নিত করেছে, বার কাউন্সিল সার্ভার সমস্যা করেছে, বার কাউন্সি সরকারে প্রজ্ঞাপন না মেনে অযৌক্তিক ফি নির্ধারন করেছে, বার কাউন্সিল ফি কমানোর ব্যাপারে শিক্ষানবীশদেও দাবী মানার আশ্বাস দিয়েছে, পরবর্তী সভায় সিদ্ধান্তের জন্য সময় নিয়েছে। সুতরাং বার কাউন্সিলের আশ্বাস অনুযায়ী আইনজীবী তালিকা ভুক্তি পরীক্ষার ফি সর্বোচ্চা ৩০০/= (তিনশত) টাকা নির্ধারণ করে রেজিস্ট্রেশন নাবয়ন প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে অব্যাহত ভাবে চলমান রেখে আজকে ফরম ফিলাপের সার্ভার খুলে দিয়ে এইন নবনির্ধারিত ৩০০/= (তিনশত) টাকা ফিতে ফরম ফিলাপ করার জন্য কমপক্ষে ৬০ কার্য দিবস মেয়াদ বৃদ্ধি করতে হবে এবং যারা ইতিমধ্যে বার কাউন্সিলের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে তাদের ভয়ে ভীত হয়ে অযৌক্তিক ফি ৪,০২০/= টাকা জমা দিয়ে ফরম ফিলাপ করেছে তাদের অবশিষ্ট টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করতেই হবে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার্স এবং বার কাউন্সিল আদেশ (রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ৪৬, ১৯৭২)-এর অধ্যায়-৬, বিধি ৫৯ এর সফা ও-তে বলা হয়েছে পরীক্ষার ফি মোট ২৪০০/= টাকা যার মধ্যে এনরোলমেন্ট ফি ১৫০০/= টাকা, লিখিত পরীক্ষার ফি ৭০০/= টাকা এবাং বার্ষিক ফি ২০০/= টাকা। যদি পরীক্ষার আগেই এনরোলমেন্ট ফি নেয়া হয়, তাহলে নিশ্চিৎ এনরোলমেন্ট হবেই। লিখিত পরীক্ষার ফি আগে নেয়া হলে অবশ্যই এমসিকিউ অনুত্তীর্ণ হলেও লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে- বিষয়টা ল অব পয়েন্ট এভাবেই বোধগম্য বটে।।
আবার ৫৯এ বিধিতে বলা হয়েছে পরীক্ষার আবেদন পত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখের পরেও আবেদনের মেয়াদ বৃদ্ধি করার বিধান আছে, যা অতিরিক্ত ২০০/= টাকা ফি দিয়ে আবেদন করার বিধান আছে। ২০২৫ সালের তালিকাভুক্তি পরীক্ষায় আবেদনের শেষ দিন ঈদুল ফিতরের দিন ছিল। তথাপি এই পরীক্ষার ফরম ফিলাপের মেয়াদ না বাড়িয়ে এখনেও বারকাউিন্সিল নিজেদের আইনই লংঘণ করেছে এবং স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণ দিয়েছে।
যেখানে বার কাউন্সিল নিজের নির্বাচন, নিজেদের বিভিন্ন ব্যর্থাতায় কয়েক বছর পরীক্ষাই নিতে ব্যর্থ হয় এবং কোন কোন সময় নিজেদের প্রয়োজনে ইতিপূর্বে অনেক পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনও করেছেন, সেখানে এখন বার কাউন্সিলেরও গাফিলতি ও সিদ্ধান্তহীনতার ফলে আটকে পড়া প্রায় ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার শিক্ষানবীশদের জন্য ফরম ফিলাপের মেয়াদ ৬০ (ষাট) দিন বাড়ালে বরঞ্চ বার কাউন্সিলেরই নৈতিক ও আইনগত দায় মোচন হবে।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইনজীবী তালিকা ভুক্তি পরীক্ষ্য তিনটি জ্বরে নিচ্ছে। একটা জ্বর পাশ করার পর পরবর্তী স্তরে পাশ না করলে আবরও তাকে প্রথম স্তরে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ এমসিকিউ পাশ করলে রিটেন, রিটেন পাশ করলে ভাইবা। কিন্তু একজন এমসিকিউ উত্তীর্ণ করা শিক্ষানবীশ দুই বার রিটেন ফেল করলে তাকে আবার এমসিকিউ পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আবার রিটেন উত্তীর্ণকারী যদি ভাইবায় ৩ বার উত্তীর্ণ না হয় তাকেও আবার এমসিকিউ পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। বিষয়টা এমন যে, একজন এসএসসি পরীক্ষা উত্তীর্ণকারী দুই বার উচ্চমাধ্যমিক ফেল করলে তাকে আবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার জন্য নেয়া হচ্ছে এবং আবার এইএসসি উত্তীর্ণকারীকে পরবর্তীতে তিন বার স্নাতক পরীক্ষায় ফেল করলে তাকে আবার এসএসসি পরীক্ষায় প্রেরণ করা হচ্ছে। আসলেকি এটা আইন সঙ্গত? জাতির কাছে প্রশ্ন। আমাদের আবেদন হলো যে যে ধাপের পরীক্ষা একবার উত্তীর্ণ হবে সে সেই ধাপের পরীক্ষা আর কখনোই দিবে না, অবশ্যই পরবর্তী ধাপের পরীক্ষাই দিবে।
আরও বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বার কাউন্সিল নিজস্ব আইনে স্বেচ্ছাচারিতার আইনী রক্ষাকবচও রেখেছে ১৭ এবং ১৮ নং অনুচ্ছেদে। এখানে বলা হয়েছে বার কাউন্সিল কোনরূপ ভুল করলে বা ইচ্ছাকৃতভাবে যা ইচ্ছা তা করবে, কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনা সংক্ষুব্ধ পক্ষ কোনপ্রকার আইন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেনা।
তাহলে, অতিরিক্ত পরীক্ষার ফি নেয়া, হুট করে বিনাকারণে সার্ভার বন্ধ রেখে রেজিস্ট্রেশন নবায়ন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা, ফি কমানোর আশ্বাস দিয়ে ফি না কমিয়ে ধোকাবাজি করা, লিখিত পরীক্ষায় দুর্নীতির মাধ্যমে ফলাফল প্রভাবিত করা, ভাইবা পরীক্ষার মধ্যে ব্যাক্তগত, পারিবারিক, আর্থিক, অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে ফলাফলকে প্রভাবিত করার সুযোগ রাখা ইত্যাদি অনিয়ম ও দুর্নীতিরই বহিঃপ্রকাশ। যা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নিজেই বার কাউন্সিলের সাবেক উপসচিব জনাব আফজালুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত পরীক্ষায় দুর্নীতির সম্পৃক্ততা পেয়ে শাহাবাগ থানায় অভিযোগ করেছে। যেখানে নিজেই নিজের কৃত কর্মপ্রক্রিয়াকে দুর্নীতিগ্রন্থ বলে নিজেরই বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে সেখানে বার কাউন্সিল দুর্নীতিগ্রস্থ লিখিত পরীক্ষা কেনো বহাল রাখছে? তবে কি ধরে নিতে হবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল প্রকৃত পক্ষেই একটি দুর্নীতি গ্রন্থ প্রতিষ্ঠান। যদি তাই হয়, তাহলে বার কাউন্সিল বিলুপ্ত করা হোক। আর যদি তা না হয়, তাহলে দুর্নীতিমহ লিখিত পরীক্ষাকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি পদ্ধতি থেকে চিরতরে বাতিল করা হোক।
সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানান দিচ্ছি যে, সকল দুর্নীতির অবসান ঘটাতে দুর্নীতির প্রভাবে জড়জড়িত বিতর্কিত লিখিত পরচীক্ষা চিরতরের জন্য বাতিল করে শুধু মাত্র ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্কিংবিহীন ৪০শে পাশ পদ্ধতিতে তালিকাভুক্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকাভুক্তি প্রদান করলেও বার কাউন্সিলের দায় কিছুটা হলেও লাঘব হতে পারে। আর যদি এই এমসিকিউ পরীক্ষায়ও দুর্নীতির প্রকোপ আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়, তাহলে সকল ধরণের পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে বার কাউন্সিলে নিবন্ধিত শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের ৬ (ছয়) মাস শিক্ষানবীশকাল উত্তীর্ণ হওয়ার পর সৌজন্য স্বাক্ষাৎকার নিয়ে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হোক।
অতএব, সবার আগে বার কাউন্সিলের প্রদত্ত আশ্বাসের প্রতিফলন ঘটিয়ে আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার আবেদন ফি সর্বোচ্চ ৩০০/= (তিনশত) টাকা নির্ধারণ করে বার কাউন্সিলের আশ্বাসের ফলে হৃসকৃত ফি-তে ফরমফিলাপ করার আশায় অপেক্ষমান থেকে বার কাউন্সিলের গাফিলতির কারণে ফরম ফিলাপ করতে না পাড়া প্রায় ৩৫/৪০ হাজার শিক্ষানবীশ আইনজীবীদেরকে ফরম ফিলাপ সম্পন্ন করা এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য কম পক্ষে ৬০ (ষাট) কার্য দিবস ফরম ফিলাপের মেয়াদ বাড়িয়ে আজ ১৯/৪/২০২৫ তারিখ বিকাল ৫ ঘটিকার মধ্যে দাপ্তরিকভাবে লিখিত নোটপ জারি করতে হবে এবং অতিরিক্ত ফি পরিশোধ করে ফরম ফিলাপ সম্পন্ন করা সকল শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের তাদের আবেদন ফরমে উল্লেখ করা মোবালি নম্বরে রকেট, নগদ, বিকাশ ইত্যাদি সিস্টেমে তাদের টাকাটা ফেরৎ প্রদান করে অথবা তাদের মোবাইল নম্বরটি যে অপারেটরের আছে সেই অপারেটরে ফ্লেক্সিলোড করে দিয়ে সমতা নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল ফরম সম্পন্ন করা ও ৬ (ছয়) মাস শিক্ষানবীশকাল অতিক্রম করা শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের প্রার্থি বারে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্তি নিশ্চিত করুন। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস স্যারের ০০০ (খ্রি জিরো) নীতির বাস্তবায়ন করুন।